আজ সোমবার, ১০ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৫শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

বিশ্বকাপে গত ২০ বছরে এক ম্যাচে সবচেয়ে বেশি ফাউলের শিকার নেইমার

এক ম্যাচে সবচেয়ে বেশি ফাউলের

এক ম্যাচে সবচেয়ে বেশি ফাউলের

সংবাদচর্চা রিপোর্ট:

নেইমার ব্রাজিলের সবচেয়ে দক্ষ খেলোয়াড়। সদ্যই চোট সারিয়ে দলে ফিরেছেন। বিশ্বকাপের আগে দুটি প্রস্তুতি ম্যাচে অবশ্য বেশ ভালোই খেলেছিলেন। পুরো ম্যাচে খেলেননি একটি ম্যাচেও, কিন্তু যা খেলেছিলেন, তা দেখে আশায় বুক বেঁধেছিলেন অগণিত ব্রাজিলীয় সমর্থক। কিন্তু প্রস্তুতি ম্যাচ আর বিশ্বকাপ যে এক নয়, সেটি বুঝিয়ে দিল সুইজারল্যান্ড। ব্রাজিল সমর্থকেরাও বুঝল, বিশ্বকাপ ম্যাচ আক্ষরিক অর্থেই ‘যুদ্ধ’। যুদ্ধের ঝাঁজ যে কতটা সেটা বুঝলেন নেইমার। বিশ্বকাপে গত ২০ বছরে এক ম্যাচে সবচেয়ে বেশি ফাউলের শিকার হয়েছেন ব্রাজিলীয় তারকা।

কাল পুরো ম্যাচে দশ-দশবার ফাউলের শিকার হয়েছেন নেইমার। সুইস খেলোয়াড়েরা যেন নেইমারকে লক্ষ্য বানিয়েই মাঠে নেমেছিল—সদ্য চোট থেকে ফেরা খেলোয়াড়েরা এমনিতেই একটা আতঙ্কের মধ্যে থাকেন। নেইমারও নিশ্চয়ই ছিলেন। অতিরিক্ত শরীরী ছোঁয়ায় প্রতিপক্ষের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়টিকে এলোমেলো করে দেওয়ার সুইস-কৌশল কিন্তু কাল বেশ কাজে লেগেছে। নিজেকে ঠিকমতো প্রস্ফুটিতই করতে পারেননি নেইমার।

নেইমারকে সুইস খেলোয়াড়েরা যেভাবে ফাউলে ফাউলে জর্জরিত করেছে, সেটি একটা রেকর্ডই। ১৯৯৮ সালের ফ্রান্স বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের মিডফিল্ডার, সেই সময়ের সেরা ইংলিশ খেলোয়াড় ও ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ইতিহাসের সর্বোচ্চ গোলদাতা আলান শিয়ারারকে গুণে গুণে এগারোবার ফাউল করেছিল আফ্রিকার দল তিউনিসিয়া। কেবল ফাউলের শিকার ব্রাজিলিয়ানদের কথা হিসেবে নিলে, ১৯৬৬ বিশ্বকাপের পর এত বেশি ফাউলের শিকার হননি কোনো ব্রাজিলীয় ফুটবলার।

পুরো ম্যাচে নেইমারকে মার্ক করার দায়িত্বে ছিলেন সুইস মিডফিল্ডার ভ্যালন বেহরামি। এই বেহরামি একের পর এক ট্যাকল করে গেছেন নেইমারকে। যতগুলো বল বাতাসে ভেসে এসেছে, বেহরামি তার কোনটাই নেইমারকে আয়ত্তে নিতে দেননি। ৪৪ টি পাসের মধ্যে ৪১ টিতে সফল হয়েছেন। ট্যাকল করেছেন ছয়টির মতো! ফাউল করেছেন ৪ বার, বল কেড়ে নিয়েছেন দুইবার। বেহরামির পারফরম্যান্স দিয়েই বোঝা যায়, নেইমারকে আটকানোই ছিল সুইজারল্যান্ডের মূল পরিকল্পনা ছিল। পরে বেহরামি একটা হলুদ কার্ড খেয়ে গেলে তাঁকে মাঠ থেকে উঠিয়ে নেন কোচ ভ্লাদিমির পেতকোভিচ। বেহরামির বদলে মাঠে নামা ডেনিস জাকারিয়া ম্যাচের বাকিটা সময় নেইমারকে ঠেকিয়েছেন কোচের নির্দেশ মতোই। গ্রানিত শাকা, স্টেফান লিখটস্টাইনার, ম্যানুয়েল আকাঞ্জি, ফাবিয়ান শায়ের প্রভৃতি খেলোয়াড়দেরও মূল লক্ষ্য ছিলেন এই নেইমার।

নেইমারকে নিয়ে এখন সতর্ক হতেই হবে কোচ তিতেকে। বাকি ম্যাচগুলোতেও যে এমন হবে না—সেটা বলা যাচ্ছে না। নেইমারকে ছাড়া ব্রাজিল দলের কী অবস্থা হয়, সেটা তো ২০১৪ সালেই দেখেছে গোটা বিশ্ব।

গতকালের ম্যাচে ১-১ গোলে ড্র করেছে ব্রাজিল সুইজারল্যান্ড।